ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয় নেই ২২ বছর। ২০০৩ সালে ঢাকায় সাফ চ্যাম্পিয়নশীপের সেমিফাইনালে ভারতকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর আর ভারতকে হারাতে পারেনি তারা। আগামীকাল এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের শেষ হোম ম্যাচে বাংলাদেশ প্রায় দুই যুগের বন্ধ্যাত্ব ঘুচাতে চায় (bangladesh vs india football)।
বাংলাদেশের চেয়ে র্যাংকিংয়ে প্রায় ৫০ ধাপ ওপরে ভারত। শক্তিমত্তায় তেমন পিছিয়ে নেই। এরপরও এবারই ভারতকে হারানোর ভালো সুযোগ মনে করছেন অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া, ‘ভারত তাদের সেরা অবস্থায় নেই, তো এবার সেই সুবিধা যদি নিতে পারি।’
এটার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি, ‘ওদের সুপার লিগ এখনো শুরু হয়নি। অনেকে অভিযোগ করে কেন তাদের লিগ চালু হচ্ছে না। আমি মনে করি এটা আমার জন্য পজিটিভ।’
ভারত ম্যাচের আগে নেপালের বিপক্ষে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে প্রতিপক্ষ নেপাল খুব লো ব্লক করেছিল। তাই বাংলাদেশের কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার প্রত্যাশা ভারত ম্যাচে বেশি গোলের সুযোগ হবে, ‘নেপাল খুব লো ব্লকে খেলেছিল। শুধু আমাদের না ফুটবলে যখন এমন হয়, তখন সবার জন্যই কঠিন হয়ে যায়। তবে সম্ভবত ভারত সেই দিক থেকে একটু বেশি আগ্রাসী হবে এবং তারা জয়ের জন্যই খেলতে নামবে। আমরা সে অনুযায়ী কাজ করেছি। নেপালের বিপক্ষে কোন জিনিসগুলো আমরা করতে পেরেছি এবং কোন জিনিসগুলো পরিকল্পনা অনুযায়ী করতে পারিনি সব বিশ্লেষণ করেছি। আশা করি কাল সব ঠিকভাবে কাজে লাগবে।’
বাংলাদেশ গত কয়েকটি ম্যাচে শেষ মুহূর্তে গোল হজম করে পয়েন্ট হারিয়েছে। তাই আগামীকাল এই বিষয়ে বাড়তি সতর্ক থাকতে চান কোচ ও অধিনায়ক, ‘যদি আমরা তিন পয়েন্ট পেতে চাই, অবশ্যই কাল এমন কিছু ঘটতে দেওয়া যাবে না। এসব পরিস্থিতি আমাদের বিশ্লেষণ করতে হবে, সেগুলো থেকে শিখতে হবে, কাজ করতে হবে। কখনও আমরা এসব পরিস্থিতি ভালোভাবে সামলেছি, যেমন হংকংয়ের অ্যাওয়ে ম্যাচে আমরা বক্স খুব ভালোভাবে ডিফেন্ড করেছি। নেপালের বিপক্ষে আবার একই পরিস্থিতি হয়েছিল। এ কারণেই তো প্রস্তুতি ম্যাচ হয়। এখন আমাদের সেই প্রস্তুতি ম্যাচে যা হয়েছে তা থেকে শিক্ষা নিয়ে নিশ্চিত করতে হবে কাল যেন এমন কিছু না ঘটে।’
ভারত বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী দেশ হলেও দুই দলের মধ্যে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সচরাচর দেখা হয় না। সাফ চ্যাম্পিয়নশীপ ও এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে একই গ্রুপে পড়লেই মূলত খেলা হয়। আগামীকালকের ম্যাচের পর আবার কবে ভারতের বিপক্ষে খেলা এটার কোনো নিশ্চয়তা নেই। বাংলাদেশের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার বয়স ৩৫। আগামীকালই কি ভারতের বিপক্ষে তার শেষ ম্যাচ? এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন,’ এ রকমটা মনে করি না। সামনে খেলা হতেও পারে।’
ভারতের বিপক্ষে অ্যাওয়ে ম্যাচে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া খেলতে পারেননি। একাদশে তো ছিলেন না, এমনকি বদলি হিসেবেও নামাননি কোচ হ্যাভিয়ের। আগামীকাল এমন ঘটনা ঘটলে কেমন লাগবে? জামালের উত্তর, ‘এটা কোচের ওপর। না খেলতে পারলে তো আমার খারাপ লাগবেই।’
হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা বাংলাদেশের কোচ হয়ে আছেন প্রায় বছর চারেক। তার পারফরম্যান্স ও ফলাফল ফুটবলাঙ্গনে যথেষ্ট প্রশ্নবিদ্ধ। ২০২৬ সালের এপ্রিল পর্যন্ত চুক্তি থাকলেও ভারত ম্যাচের পরই তার বাংলাদেশ অধ্যায় শেষ হওয়ার গুঞ্জন রয়েছে। ভারতের বিপক্ষে হেরে বিদায় ঘটলে বাংলাদেশে তার অধ্যায় কি সফল না ব্যর্থ কোনটা বলবেন এমন প্রশ্নের উত্তর তিনি খানিকটা এড়িয়ে গেছেন, ‘এটা এখানে আলোচনা বা মন্তব্য করা যাচ্ছে না।’
খুলনা গেজেট/এএজে

